যদিওবা অনলাইন জগতে এআই (AI) এর সূচনা অনেক আগে থেকে হয়েছিলো। কিন্তুু ২০২২ সালে নভেম্বর মাসে ওপেন এআই থেকে একটি চ্যাটবট চালু করেছে। তখন থেকে মানুষের মধ্যে এআই সম্পর্কে নতুনকরে ভাবতে শিখিয়েছে।
কেননা, মানুষের মতো যে রোবট কথা বলতে পারে। সেটা দেখে পৃথিবীর সকল মানুষ এআই এর ক্ষমতা সম্পর্কে বুঝতে পেরেছে।
তবে চ্যাটজিপিটি চালু করার পর মানুষের মনে আরো একটি প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। সেটি হলো, বর্তমানে কে সেরা, গুগল নাকি চ্যাটজিপিটি? -আর আজকে আমরা সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।
গুগল বনাম চ্যাটজিপিটি
বর্তমান সময়ে অনলাইন জগতের জায়েন্ট একটি কোম্পানির নাম হলো, গুগল। যার বিভিন্ন ধরনের প্রোডাক্ট আছে। আর মানুষ দীর্ঘদিন থেকে গুগলের বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর সুবিধা ভোগ করে আসছে।
তবে গুগলের অন্যান্য প্রোডাক্ট গুলোর চাইতে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো, Google Search Engine. যেখানে আমরা নির্দিষ্ট কোনো বিষয় সার্চ করলে। সেই বিষয় সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য গুলো জানতে পারি।
কিন্তুু যখন থেকে চ্যাটজিপিটি চালু হয়েছে। তখন থেকে মানুষের মনে একটা ভ্রান্ত ধারনা তৈরি হয়েছে। সেটি হলো,
-
গুগলে কিছু সার্চ করলে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর তথ্য জানতে হয়।
-
কিন্তুু চ্যাটজিপিটি তে কিছু সার্চ করলে সরাসরি উত্তর জানা যায়।
-
তাহলে মানুষ কেন গুগল সার্চ ইঞ্জিন ব্যবহার করবে?
হ্যাঁ! আপনি বা আপনার মতো এমন অনেক মানুষ আছেন। যারা আসলে এই চিন্তা মনের মধ্যে ধারন করে আছে। আর যারা এমন চিন্তা করছেন, তাদের বলবো যে, আপনার ধারনা সম্পূর্ণ ভুল।
আর আপনার এই ধারনা সম্পূর্ণ ভাবে পাল্টে যাবে। যদি আপনি চ্যাটজিপিটি ও গুগল সার্চ ইঞ্জিন এর পাথর্ক্য জানতে পারবেন। তো চলুন এবার সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
গুগল ও চ্যাটজিপিটি এর মধ্যে পার্থক্য কি?
চ্যাটজিপিটি আসার পরে গুগল ধ্বংস হয়ে যাবে -যারা এমন ধারনা নিয়ে আছেন। তাদের অবশ্যই গুগল সার্চ ইঞ্জিন ও চ্যাটজিপিটির মধ্যে থাকা পার্থক্য জানতে হবে। যেমন,
মূলত আপনি যদি আজ থেকে ২০ বছরের আগের তথ্য জানতে চান।তাহলে গুগল সার্চ ইঞ্জিন খুব সহজেই আপনাকে সেই সময়ের তথ্য প্রদান করতে পারবে।
কিন্তুু চ্যাটজিপিটির মধ্যে রয়েছে অনেক সীমাবদ্ধতা। কেননা, তার তাৎক্ষনিক ঘটনা সম্পর্কে কিছুই বলতে পারবে না।
এবার একটু ভেবে দেখুন যে, চ্যাটজিপিটি ও গুগল সার্চ ইঞ্জিনের মধ্যে আলাদা আলাদা ক্ষমতা রয়েছে। যার কারণে একটির জন্য আরেকটি ধ্বংস হওয়ার কোনো প্রশ্নেই আসেনা।
চ্যাটজিপিটির কারণে কি গুগল ধ্বংস হয়ে যাবে?
না! চ্যাটজিপিটির ফলে গুগল কোনোভাবেই ধ্বংস হয়ে যাবেনা। কেননা, ইন্টারনেট এর শুরু থেকে এখন পর্যন্ত গুগল তার নিজের পজিশন শক্ত করে নিতে পেরেছে।
কারণ, বর্তমান বিশ্বের অনলাইন প্ল্যাটফর্ম এর অধিকাংশ অংশ জুড়ে রয়েছে গুগলের বিভিন্ন প্রোডাক্ট এর ব্যবহার। যেমন,
-
Google Search Engine.
-
Google Chrome.
-
Gmail.
-
Android.
-
YouTube.
-
Google Map,
-
Google Earth,
-
Google Adsense.
-
Google Drive.
-
Google Adwords etc.
এগুলো ছাড়াও গুগলের আরো অনেক প্রোডাক্ট রয়েছে। যেগুলো আমরা প্রতিনিয়ত ব্যবহার করি।
তো এবার একটু ভেবে দেখুন, গুগলের এই প্রোডাক্ট গুলো না থাকলে। আপনার কাছে অনলাইন জগত টা একবারে ফাঁকা হয়ে যাবে। আর সেইদিক থেকে বিবেচনা করলে, চ্যাটজিপিটি একটি প্রোডাক্ট মাত্র।
তাই এই চ্যাটজিপিটি নামক একটা প্রোডাক্ট এর কারণে গুগলের ধ্বংস হওয়ার চিন্তা। আর রাতের আকাশে সূর্যের আলো দেখার চিন্তা প্রায় একই রকম।
গুগল কি এআই (AI) ব্যবহার করে?
হ্যাঁ, অবশ্যই! গুগল আজ থেকে নয়। বরং তারা দীর্ঘদিন থেকে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসছে।
একবার ভেবে দেখুন তো, গুগলে আপনি যাই লিখে সার্চ করেন। গুগল আপনাকে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সেই বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে দেয়। কিন্তুু এই তথ্য গুলো কি কোনো মানুষ ম্যানুয়ালি কাজ করে দেয়?
না, বরং গুগল এর সাথে যুক্ত থাকা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মাধ্যমে এই কাজ গুলো করা হয়। কেননা, উক্ত কাজ গুলো কখনই মানুষের পক্ষে এতো দ্রুত করা সম্ভব নয়।
আর চ্যাটজিপিটির মতো গুগল থেকেও একটি চ্যাটবোট চালু করা হয়েছে। যার নাম হলো, Google Bard. চাইলে আপনি এই চ্যাটবোট ব্যবহার করে দেখতে পারেন। আশা করি, আপনার ভালো লাগবে।
আপনার জন্য আমাদের কিছুকথা
দেখুন, আমরা অনেকেই চ্যাটজিপিটি কে সম্পূর্ণ AI মনে করি। আসলে এআই এর একটি অংশ হলো, চ্যাটজিপিটি। আর ভবিষ্যত সময়ে এআই গোটা বিশ্বকে পরিবর্তন করে দিবে।
হয়তবা আমরা ভবিষ্যতে এমন একটা বিশ্বকে দেখতে পারবো। যা আমরা বর্তমানে কল্পনা কিংবা মুভি, নাটকে দেখি। তবে তার জন্য আমাদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে।
আর এমন ধরনের অজানা বিষয় গুলো সহজ ভাষায় জানতে হলে। নিয়মিত Niru Web ব্লগে ভিজিট করতে হবে। ধন্যবাদ, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।